‘সবচেয়ে সত্য ক’রে পেয়েছিনু যারে/ সবচেয়ে মিথ্যা ছিল তারি মাঝে ছদ্মবেশ ধরি’– রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন। মানুষের জীবন আলো-অন্ধকারময়। অন্ধকার কি আলোর অভাব নাকি আলো অন্ধকারেরই আরেক রূপ– এসব দার্শনিক তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকবে– মীমাংসা হবার নয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হল, এইসব আলো ও অন্ধকারের মধ্য থেকে কোনটা আমাদের জীবনকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে! একুশ শতকের জীবন যেন ছায়াময়। সাদাকে আলো আর কালোকে অন্ধকার হিসাবে ধরলে জীবনটা সাদা ও কালোর মধ্যবর্তী অসংখ্য ছায়াস্তরে লীন হয়ে থাকে, তাকে বাইনারির সাদা-কালোয় ভাঙা কঠিন। মানুষের সমাজ-রাজনৈতিক-আর্থনীতিক জীবন এখন এক ডিজিটাল পৃষ্ঠে এসে পৌঁছেছে। এখানে সব কিছুই ভার্চুয়াল। তার মধ্য থেকে রিয়েলিটিকে খুঁজে বের করে আলাদা করতে পারাটাই হল মস্ত চ্যালেঞ্জ। জীবনের প্রত্যেকটি প্রেক্ষিতে এখন তাই জড়িয়ে-জড়িয়ে আছে ভার্চুয়াল-রিয়েলিটিকে ধারণ করেছে যে বিরাট ব্যবস্থা, সেই ইন্টারনেট। এখানে ইতিবাচক দিকও যেমন আছে, তেমনই আছে নেতিবাচকও। এখানে সৎ-সুযোগ যেমন বিপুল, তেমনই প্রতারণার জালও কুটিল। এখানে মানুষ যৌথভাবে যেমন আছে, তেমনই একাকীত্ব-নিঃসঙ্গতাও কম নেই। সব মিলিয়ে এক আবশ্যক-অনাবশ্যকের ঘেরাটোপে আমরা অন্তর্ভুক্ত হয়েছি, যেন চক্রব্যূহ, তবে উপায় জানা থাকলে সম্রাট।