রবীন্দ্রনাথ প্রশ্ন তুলছেন সভ্যতাকে নিয়ে। কাকে সভ্যতা বা উন্নয়ন বলব? যে বছর উনি ‘রক্তকরবী’ লিখছেন (১৯২৪), চিনে গিয়ে এক বক্তৃতায় বলছেন, ‘ধনী পশ্চিম একশো বছরেরও বেশি তাদের রথে আমাদের টেনে নিয়ে চলেছে। তার ধুলোয় আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসছে, আওয়াজে কানে তালা লাগছে, আমাদের নিজেদের অসহায়তায় আমরা বিনম্র হচ্ছি এবং রথের গতিবেগে বিহ্বল হচ্ছি। আমরা স্বীকার করে নিয়েছি যে, এই রথযাত্রাই হচ্ছে উন্নয়ন এবং সেই উন্নয়নই সভ্যতা। যদি কেউ প্রশ্ন করার সাহস করে, ‘কীসের জন্য উন্নয়ন এবং কার জন্যে উন্নয়ন’ তাহলে তা অদ্ভুত এবং হাস্যকরভাবে পূর্বদেশীয় বলে মনে করা হবে।’ প্রয়াণের বছরে (১৯৪১), লিখছেন ‘সভ্যতার সংকট’: ‘কম বয়সে ইউরোপের সভ্যতার অন্তরের দানকে আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু আজ আমার এই বিদায়ের দিনে সেই বিশ্বাস একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেল।’ ১৯৪০ সালে কালিম্পং থেকে কবি অমিয় চক্রবর্তীকে এক চিঠিতে তিনি লিখছেন, ‘ব্রাহ্মণের মাথা, ক্ষত্রিয়ের শক্তি এবং শূদ্রের কাজকে ব্যবহার করে আজকের ব্যবসায়ী মনোবৃত্তির ইউরোপকে আর ঠেকানো যাচ্ছে না। কিন্তু, আমি দেখতে পাচ্ছি যে তাদের পা এক আনত তলে বিলুপ্তির পথে।’
আজ যদি ভারত ও চিনের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ সিদ্ধান্ত নেয় যে তারাও লুক্সেমবার্গের মতো মাথাপিছু ১৪ global hectare (gha) বা অস্ট্রেলিয়া, কানাডা অথবা আমেরিকার মতো ৮ gha-এর বেশি বাস্তুতান্ত্রিক পায়ের ছাপ (Ecological Footprint) ফেলবে, যেখানে পৃথিবীর ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে মাথাপিছু মাত্র ১.৯ gha, তাহলে কয়েক দশকেই পৃথিবী মরুভূমি হয়ে যাবে।
পৃথিবীর এই শিল্পায়িত নাগরিক সমাজের বিপদের কথা রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধী অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। গান্ধী বলছেন, ‘সময় আসছে যখন আজ যারা পাগলের মতো তাদের চাহিদা বাড়িয়ে চলেছে… তারা একদিন তাদের পথ বদলাবে এবং বলবে, ‘এ আমরা কী করলাম’?’ তাই, ১৯০৪ সালে রবীন্দ্রনাথ লিখছেন ‘স্বদেশী সমাজ’ এবং গান্ধী ১৯০৭ সালে গুজরাতিতে ‘হিন্দ স্বরাজ’। ‘স্বদেশী সমাজ’-এ রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘আমাদের সমাজ এখন আর এরূপভাবে চলিবে না। কারণ বাহির হইতে যে উদ্যত শক্তি প্রত্যহ সমাজকে আত্মসাৎ করিতেছে তাহা ঐক্যবদ্ধ, দৃঢ়- তাহা আমাদের বিদ্যালয় হইতে আরম্ভ করিয়া প্রতিদিনের দোকানবাজার পর্যন্ত সর্বত্রই নিজের একাধিপত্য স্থুলসূক্ষ্ম সর্ব আকারেই প্রত্যক্ষ্যগম্য করিয়াছে (জনান্তিকে, রবীন্দ্রনাথ যেন আজকের শিক্ষা, খুচরো ব্যবসা ইত্যাদিতে কর্পোরেট ও বহুজাতিক সংস্থার অনুপ্রবেশের কথা বলছেন)। এখন সমাজকে ইহার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করিতে হইলে অত্যন্ত নিশ্চিতরূপে তাহার আপনাকে দাঁড় করাইতে হইবে। সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি প্রত্যহ অতি অল্প পরিমাণেও কিছু স্বদেশের জন্য উৎসর্গ করিবে। বহু সম্বন্ধবিশিষ্ট গ্রাম সমাজের পরিবর্তন এনে দেশের পুনরুজ্জীবন আনতে হবে।’
ক্রমেই রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধী দুজনেই গ্রাম পুনর্গঠনের কাজে যুক্ত হচ্ছেন। এল্মহার্স্টকে নিয়ে আসছেন। শ্রীনিকেতন স্থাপন করছেন। সমবায়ের ওপর রবীন্দ্রনাথের চারটি প্রবন্ধ আছে। ১৯২২ সালে ‘সমবায়-২’ প্রবন্ধে কবি স্বাবলম্বনের কথা লিখছেন, ‘দেশের সমস্ত গ্রামকে নিজের সর্বপ্রকার প্রয়োজনসাধনক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে (এ প্রায় গান্ধীর গ্রাম স্বরাজের কথা)। এজন্য কতকগুলি পল্লী নিয়ে এক একটি মণ্ডলী স্থাপন করা দরকার। সেই মণ্ডলীর প্রধানগণ যদি গ্রামের সমস্ত কর্মের ও অভাবমোচনের ব্যবস্থা করে মণ্ডলীকে নিজের মধ্যে পর্যাপ্ত করে তুলতে পারে তবেই স্বায়ত্তশাসনের চর্চা সর্বত্র সত্য হয়ে উঠবে। নিজ পাঠশালা, শিল্প শিক্ষালয়, ধর্মশিক্ষা, সমবেত পণ্যভাণ্ডার ও ব্যাঙ্ক স্থাপনের জন্য পল্লীবাসীদের সাহায্য ও উৎসাহ দান করতে হবে। এমনি করে পল্লীগুলি আত্মনির্ভরশীল ও ব্যূহবদ্ধ হয়ে উঠলেই আমরা রক্ষা পাব। কিভাবে বিশিষ্ট পল্লীসমাজ গড়ে তুলতে হবে সেই হচ্ছে আমাদের প্রধান সমস্যা।’
১৯৪৫ সালের ৫ অক্টোবর এক চিঠিতে গান্ধী নেহেরুকে লিখছেন, ‘তোমার সঙ্গে আমার চিন্তার মধ্যে যদি গভীর ফারাক থাকে তবে দেশবাসীর তা জানা দরকার।… আমি নিশ্চিত যে ভারতকে যদি সত্যিকারের স্বাধীনতা পেতে হয় এবং ভারতের মধ্যে দিয়ে সারা পৃথিবীকেও, তাহলে শীঘ্র অথবা কিছু পরেই আমাদের বুঝতে হবে যে মানুষকে গ্রামে বাস করতে হবে শহরে নয়, কুঁড়েঘরে প্রাসাদে নয়। কোটি কোটি মানুষ শহর ও প্রাসাদে নিজেদের মধ্যে শান্তিতে থাকতে পারবে না। তাদের তখন হিংসা এবং অসত্য ছাড়া আর অন্য কোন পথ থাকবে না… তুমি এটা ভেব না যে আমি আজকের মতো গ্রাম সমাজের কথা কল্পনা করছি। আমার স্বপ্নের গ্রাম আজও আমার মনে গাঁথা আছে। প্রতিটি মানুষই তার স্বপ্নের জগতে বাস করে। আমার আদর্শ গ্রামে বুদ্ধিমান মানুষ বাস করবে। তারা জন্তুর মতো ময়লা ও অন্ধকারে বাস করবে না। স্ত্রী এবং পুরুষ মুক্ত থাকবে এবং পৃথিবীর যে কোনও মানুষের সামনে নিজের স্বকীয়তা বজায় রাখবে।’ নেহেরু চারদিন পরে ৯ অক্টোবর উত্তরে বলছেন, ‘হিন্দ স্বরাজ ৩৮ বছর আগে লেখা হয়েছিল। সেদিনের চেয়ে আজ বিশ্ব সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে, বোধহয় একটা ভুল পথে… আপনি ঠিকই বলেছেন যে পৃথিবী বা তার একটি বড় অংশ মনে হচ্ছে আত্মহত্যা করার জন্য উদগ্রীব। তার কারণ বোধহয় একটি দুষ্ট বীজ সভ্যতায় পোঁতা হয়েছিল।’ নেহেরু তাঁর ‘আত্মজীবনী’তে লিখছেন, ‘আমরা পরিবর্তনের নদীকে থামাতে পারি না অথবা তার থেকে আলাদা হয়ে থাকতে পারি না এবং মনের দিক থেকে আমরা যারা একবার ইডেন-এর আপেল খেয়েছি তার স্বাদ ভুলতে পারি না এবং আদিমতায় ফিরে যেতে পারি না।’ তা, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর শিল্প আপেল খেয়ে ভারতের কী হাল হয়েছে তা আগেই আলোচনা করা হয়েছে।
মারা যাবার এক বছর আগে ১৯৬৩ সালে নেহেরু প্রায় বুক চাপড়ে কাঁদছেন। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লিতে ‘Social Welfare in a Developing Economy’ সেমিনারে নেহেরু বলছেন, ‘আমার মন এই বোধ আনার চেষ্টা করছে, যে দেশের ৫ লাখ ও ৫০,০০০ গ্রাম এবং সেখানে যে সব মানুষ বাস করে তাদের নিয়ে কী করব… আমি যদি শুধু উৎপাদনের কথা ভাবি তাহলে এই সমস্ত বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ কারখানা কৃষির মতো অত গুরুত্বপূর্ণ নয়… গান্ধী যা ভেবেছিলেন তা খুবই ঠিক। তিনি সবসময় ভারতের গ্রামের কথা এবং ঐসব গ্রামে অনুন্নত মানুষের কথা ভাবতেন এবং কিছু একটা পরিকল্পনা করেছিলেন। তা শুধু তাঁতই ছিল না। সেটি তো ছিল একটি প্রতীক মাত্র। তিনি গ্রামীণ শিল্পের ওপর জোর দিয়েছিলেন যা আবার আধুনিক মানুষ কোনও কাজের জিনিস বলে মনে করে না।’
১৯৬৩-র ২৩ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে পরিকল্পনার ওপর একটি বিতর্কে নেহেরু বলছেন, ‘আমি বেশি বেশি করে মহাত্মা গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গির কথা ভাবছি। এটি অদ্ভুত যে আমি এই বিষয়ে তাঁর নাম করছি। আমি সবদিক থেকে আধুনিক যন্ত্রের প্রশংসক। আমি সবচেয়ে ভাল মেশিনারি এবং প্রযুক্তি চাই। কিন্তু, আজ ভারতের যা অবস্থা, আমরা যত তাড়াতাড়িই না যন্ত্রের দিকে এগোই… বিরাট সংখ্যক মানুষকে তা বেশ কিছুকাল ধরে ছোঁবে না।’ এই বোধ যদি নেহেরুর আগে আসত তাহলে হয়তো ভারতের ইতিহাস অন্যরকম হত।
রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধী দুজনেই গ্রাম পুনর্গঠনের কথা বলছেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ এবং তাঁর প্রিয় সন্তোষ কুমার মজুমদারকে কৃষিবিদ্যা এবং নিজের জামাই নগেন্দ্রনাথকে ডেয়ারি শিখতে আমেরিকা পাঠালেন। বহু গ্রামে কাজ করছেন। রবীন্দ্রনাথ যখন দেখলেন যে শান্তিনিকেতনের পাঠভবনে তাঁর শিক্ষার আদর্শ পুরোপুরি পালন করা যাবে না তখন তিনি শ্রীনিকেতনে ‘শিক্ষাসত্র’ খুলছেন গ্রামের গরিব শিশুদের জন্য, যেখানে তাঁর শিক্ষাদর্শ পালন করা যাবে।
১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে গান্ধী ঠিক করলেন বিনা পাসপোর্টে পায়ে হেঁটে পাকিস্তান যাবেন। যখন দিল্লি পৌঁছলেন তখন দেখছেন সেখানে বিরাট দাঙ্গা চলছে এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীরা মুসলমানদের বাড়ি, মসজিদ দখল করছে। গান্ধী ১৩ জানুয়ারি অনশন শুরু করলেন। ১৪ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে তাঁর স্বপ্নের ভারতের কথা বলছেন, ‘যেখানে একে অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধালু হবে, যেখানে নারীর ইজ্জত রক্ষিত হবে, যেখানে অস্পৃশ্যতা থাকবে না, থাকবে না কোনও মাদক দ্রব্যে আসক্তি। যেখানে নিঃস্ব বা ভিক্ষাজীবী বলে কেউ থাকবে না, থাকবে না উচ্চ নীচের ভেদ- একদিকে ধনীর অসীম বৈভব আর অন্যদিকে অর্ধাশনে দিবস যাপনকারী শ্রমজীবী মানুষের বৈষম্য। যেখানে সবাই স্বেচ্ছায় সানন্দে কায়িক শ্রমের দ্বারা জীবিকা উপার্জন করতে গর্ব বোধ করবে। কায়িক শ্রম ও বৌদ্ধিক শ্রমের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকবে না। আমি সেই সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরণ অনশন চালিয়ে যেতে চাই।’ তাঁকে আর অনশন চালাতে হয়নি। হিন্দু মহাসভার এক আতঙ্কবাদী ২৮ জানুয়ারি তাঁকে হত্যা করল। তারাই আজ দেশে আবার আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
এই আলোচনার আলোকে ভবিষ্যৎ সমাজের এই রূপটি আমি সমাজের কাছে পেশ করতে চাই:
· প্রকৃতির জমি, মাটি, জল, বাতাস, অরণ্য, নদী, সমুদ্র, পর্বত ইত্যাদির স্বাস্থ্য বজায় রেখে সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য সৃষ্টি করতে হবে এবং তা শুধু বর্তমান প্রজন্মের জন্যই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাঁচার অধিকারকেও মনে রাখতে হবে;
· ধাতু নির্ভর সমাজ নয়, জৈব নির্ভর সমাজ;
· সবার জন্য প্রয়োজন মতো খাদ্য;
· রাসায়নিক পদ্ধতিকে বর্জন করে জৈব পদ্ধতিতে কৃষি;
· প্রত্যেকের জন্য স্বাস্থ্যপূর্ণ নানারকম খাদ্যের ব্যবস্থা;
· রবীন্দ্রনাথের কথা মনে রাখতে হবে, ‘সহজ ও সরল সমাজই সভ্যতার মাপকাঠি এবং অপরিমিত হচ্ছে বর্বরতা।’
· শহর সভ্যতাকে বর্জন করে এক সহজ সরল গ্রাম সমাজ নির্মাণ করতে হবে। সবাইকে বাস্তুতন্ত্রের দিক থেকে সুস্থায়ী গৃহে বাস করতে হবে। বাড়িগুলো এমন হবে যে সেগুলো তারাই নির্মাণ এবং সংরক্ষণ করতে পারবে। বাড়ি হবে শক্তির দিক থেকে দক্ষ। কিছু কিছু বাড়িকে ভাঙতে হবে। কিন্তু, সমস্ত ভেঙ্গে ফেলা জিনিসকে পুনর্ব্যবহার করতে হবে;
· ভাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আয়োজন করতে হবে;
· যে সমস্ত অপ্রয়োজনীয় জিনিস সবাই ব্যবহার করতে পারবে না তার উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। এটি করা গেলে শক্তি এবং নানারকমের ধাতুর প্রয়োজনও কমে যাবে;
· সমস্ত পুরনো এবং ফেলে দেওয়া জিনিসকে আবার ব্যবহার করতে হবে;
· সমস্ত উৎপাদন হবে কো-অপারেটিভের মধ্যে দিয়ে। বেশিরভাগ জিনিস স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ও ব্যবহার করতে হবে। এতে জিনিসপত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবহন করার প্রয়োজন হবে না। এটি হলে শক্তি, পরিবহন, জিনিসপত্র, রাস্তা, ব্রিজ ইত্যাদির প্রয়োজন অনেক কমে যাবে;
· বেশিরভাগ মানুষ গ্রামেরই বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত থাকবে। মার্কস কম্যুনিস্ট সমাজে এই Associated Producers-দের কথাই বলেছিলেন। নগরায়নের প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে;
· লিঙ্গসাম্য আনতে হবে;
· Associated Producers-দের এই গ্রামভিত্তিক সমাজে এক নতুন রকমের শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে, সেই শিশুকাল থেকে যা চেষ্টা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধী। যে শিক্ষা শিশুকে আত্মনির্ভর হতে শেখাবে;
· শিশুকাল থেকে শিশুকে নতুন এক উন্নত সংস্কৃতিতে উদবুদ্ধ করতে হবে যা নিজের সঙ্গে অপরের ভাবের মিলন ঘটাতে পারে। এর ফলে বর্তমান শিল্প সমাজে যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়েছে তার অবসান হবে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় এক বহু সম্বন্ধবিশিষ্ট সমাজের নির্মাণ হবে। ভোগবাদকে পরিহার করে এক সরল কিন্তু উচ্চ চিন্তার সংস্কৃতি নির্মিত হবে রবীন্দ্রনাথের কথা মনে রেখে, ‘না রে না হবে না তোর স্বর্গসাধন, যতই করিস সুখের সাধন।’ মার্কস, রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীর ভাষায় শ্রম হবে মানুষের জীবনের আনন্দের এক অংশ;
· কিন্তু কী করে আসবে এই সমাজ? এর জন্য চাই অহিংস সংঘর্ষ ও নির্মাণ। একদিকে সমাজ বদলাবার জন্য মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অহিংস সংগ্রাম এবং অন্যদিকে সমাজ নির্মাণের কাজ যেমন শুরু করেছিলেন গান্ধী এবং শঙ্কর গুহ নিয়োগী।
· এই প্রবন্ধের প্রায় প্রতিটি বিষয় নিয়ে একটি করে প্রবন্ধ লেখা যেতে পারে।
(শেষ)