লগ্নি কেন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে!

অভিধান অনুযায়ী ‘Crypto’ শব্দের অর্থ হল চোরা কিংবা গুপ্ত। আর ‘Currency’ হল মুদ্রা। অর্থাৎ, দুই মেলালে হয় গুপ্তমুদ্রা। একুশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই এই ‘গুপ্তমুদ্রা’ গোটা দুনিয়া জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে। এই মুদ্রাকে গোপনীয়তা দান করেছে আধুনিকতম প্রযুক্তি, তার ফলেই ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল এই মুদ্রার রমরমা আকাশ স্পর্শ করেছে। এটা বর্তমানে এমন একটি বিকল্প অর্থপ্রদানের পদ্ধতি বা বিনিয়োগ হিসাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করেছে যে বাস্তব মুদ্রাব্যবস্থা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। বিটকয়েন, ইথেরিয়ম, কারদানো, ডজকয়েন, শিবা, ইনু ইত্যাদির মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি ক্রিপ্টোগ্রাফিক (ব্লকচেইন) কৌশলগুলি থেকে তাদের এই সাধারণ নাম পেয়েছে। মানুষ রাষ্ট্রশক্তি ও নানান নিয়ন্ত্রণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির অনুমতি ছাড়াই, বা বলা ভালো এড়িয়ে, নিরাপদেই এগুলি কিনতে ও বিক্রি করতে পারছে। ফলে, ব্যবসা দ্রুতগতিতে বাড়ছে।

কিন্তু প্রশ্ন হল, ক্রিপ্টোকারেন্সিকে কি সিকিউরিটির মর্যাদা দেওয়া যায়? অর্থব্যবস্থায় সিকিউরিটি হল এক ধরনের মূল্য যাকে বাস্তব-বাজারে বেচাকেনা করা যায়। স্টককেও সিকিউরিটি বলা যায়, কারণ কোনও সংস্থার ক্ষেত্রে এটি মালিকানাকে চিহ্নিত করে থাকে। বন্ডকেও এক জাতীয় সিকিউরিটিই বলা হয়। এই দুটো দিয়েই বাণিজ্য করা সম্ভব। দুনিয়া জুড়ে কানাঘুষো চলছে যে, ক্রিপ্টোকারেন্সিকেও সিকিউরিটির মর্যাদা দেওয়া হবে। স্বাভাবিকভাবেই, কানাঘুষোর বিরুদ্ধে নানান প্রতিবাদও দেখা যাচ্ছে। যুক্তিটা হল, সিকিউরিটির ক্ষেত্রে যে-সমস্ত নিয়ম লাগু হয়, ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে তা প্রযোজ্য হয় না। এই অনুষঙ্গে অনেকে নন-ফাঞ্জিবল টোকেনের (এনএফটি) কথা বলছেন। তবে ক্রিপ্টোর সঙ্গে এর মূলগত তফাতটা হল চরিত্রে। অর্থাৎ, ক্রিপ্টো হল স্বভাবতই ফাঞ্জিবল কিন্তু ডিজিটাল মালিকানাযুক্ত এনএফটি তো নামেই ফাঞ্জিবল নয়, চরিত্রে তো নয়ই। এখন জল কোন্‌ দিকে গড়াতে চলেছে তার দিকে সকলেরই নজর স্থির হয়ে আছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!